যশোর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে উপচেপড়া ভিড়। আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে শয্যাপাশে স্বজন, বন্ধু ও শিক্ষকরা। এদের একজন  যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজের মাস্টার্স অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন অন্যরা।

শরিফুল জানালেন, বুধবার বিকালে যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বারোবাজার এলাকায় যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় তার বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান নিহত হয়েছেন। আর চাচাতো ভাই শিমুল হোসেন হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

হাসপাতালে ভর্তি যশোর সরকারি এমএম কলেজের মাস্টার্সের পাঁচ পরীক্ষার্থীর চিকিৎসায় হাসপাতালে ছুটে এসেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা। আহতদের সুচিকিৎসায় তাদের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। কেউ ওষুধের খোঁজে, আবার কেউ রক্তের সন্ধানে ছুটছেন। কেউ কেউ শয্যাপাশে দাঁড়িয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

বারোবাজারে বাস দুর্ঘটনায় আহত অন্তত ৯ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে আহতদের খোঁজখবর নিতে আসা সরকারি এমএম কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাবেক সম্পাদক ও অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দীন বলেন, বুধবার মাস্টার্সের ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ঝিনাইদহ এলাকার শিক্ষার্থীরা বাসে বাড়ি ফিরছিলেন। বারোবাজার দুর্ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী নিহতের খবর পেয়েছি। আর হাসপাতালে ভর্তি আছেন পাঁচজন। শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে আমরা কাজ করছি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, যশোর ঝিনাইদহ মহাসড়কের বারোবাজার এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১০ জনকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন- ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লাওদিয়া গ্রামের খঞ্জের আলীর ছেলে আব্দুর রহিম, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর এলাকার আব্দুল হকে ছেলে মাহফুজুর রহমান, একই উপজেলার তাহেরহুদা গ্রামের নায়েব আলীর মেয়ে বিউটি, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার একতারপুর গ্রামের তানজিল হোসেনের ছেলে শিমুল হোসেন, একই উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের আদিল উদ্দিনের মেয়ে শান্তা ও একই গ্রামের মুজিবউল্লাহর মেয়ে আলো। এরা সবাই মাস্টার্স পরীক্ষার্থী।

বাকিরা হলেন- ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কাকলিয়া গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে কাবিল এবং শাহাদৎ ও অজ্ঞাত একজন। এদের মধ্যে এমএম কলেজের ছাত্র শিমুল হোসেনের শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক অমীয় দাস বলেন, বিকাল ৪টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় কয়েকজন আহতকে এখানে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বুধবার বিকাল ৩টার দিকে যশোর-ঝিনাইদহ সড়কের বারোবাজার নামক স্থানে ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।

সূত্রঃ যুগান্তর