ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশ মালদ্বীপ বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালের নভেম্বরে মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লা শহিদ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে ফোন করে পলিমাটির বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। এ সময় উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের বিষয়েও সম্মতি প্রকাশ করেন।
কেন বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নিতে চায় মালদ্বীপ কিংবা এই মাটি নিয়ে তারাই বা কী করবে- এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলা।
প্রতিবেদনে বিবিসিকে মালদ্বীপে বাংলাদেশের হাইকমিশনার রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান বলেন, শিগগির দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে সরাসরি বৈঠক হবে। আলোচনায় বাংলাদেশ থেকে পলিমাটি নেওয়া এবং সরাসরি জাহাজ চলাচলের মতো বিষয়গুলোও থাকবে। মালদ্বীপকে বালু ও পলিমাটি নেওয়ার এ প্রস্তাব বাংলাদেশই প্রথম দিয়েছিল চার বছর আগে।
জানা গেছে, মালদ্বীপের অর্থনীতি চাঙা হতে শুরু করেছে মূলত এক দশক ধরে এবং ২০১২ সালে দেশটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পর সেখানে ব্যাপক অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয়েছে। কিন্তু মালদ্বীপের সাগর থেকে আহরিত বালু দিয়ে নির্মাণকাজ বা মাটি ভরাটের কাজ করা যায় না বলে দেশটিকে পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে পলিমাটি ও বালু আমদানি করতে হয়।
মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা অগ্রসর না হওয়ায় একপর্যায়ে এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করে মালদ্বীপ।পলিমাটি ও বালু নিয়ে ভারতের একটি নীতিমালাও আছে এবং দেশটি মালদ্বীপে রফতানির জন্য একটি কোটাও সংরক্ষিত করে রেখেছে।এ প্রসঙ্গে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান আরো বলেন, মালদ্বীপ দ্বীপভিত্তিক দেশ এবং সেখানে অনেক দ্বীপের ব্যাপক উন্নয়ন করা হচ্ছে। আর আইল্যান্ড বা দ্বীপ তৈরির জন্যই উপরিভাগে বিপুল পরিমাণ পলিমাটি দিতে হয়। আবার কৃষির জন্যও মালদ্বীপ পলিমাটি ব্যবহার করে। তাই কৃষি ও আইল্যান্ড উন্নয়নের জন্য পলিমাটি যেমন দরকার, তেমনি অবকাঠামো নির্মাণের জন্য তাদের দরকার প্রচুর বালু।
তবে মালদ্বীপে বালু ও পলিমাটি রফতানির ক্ষেত্রে বড় বাধা হলো পরিবহন সমস্যা। দু’দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল চুক্তি না থাকায় বাংলাদেশ থেকে জাহাজকে সিঙ্গাপুর হয়ে মালদ্বীপ যেতে হয় বলে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায় অথচ ভারত বা শ্রীলংকা থেকে সরাসরি জাহাজ মালদ্বীপ যেতে পারে বলে তাদের পরিবহন খরচ হয় অনেক কম। তাই পলিমাটি রফতানি করতে হলে সবার আগে জলপথে দুই দেশকে সরাসরি জাহাজ চলাচলের চুক্তিতে আসতে হবে।